• হোম > অর্থনীতি | এক্সক্লুসিভ > অনলাইনে বেচাকেনা বাড়ছে, ‘‘বাংলাদেশেও এই ট্রেন্ড বাড়বে কারণ এখানে মানুষদের এখনও ঘরেই থাকতে হচ্ছে।’’

অনলাইনে বেচাকেনা বাড়ছে, ‘‘বাংলাদেশেও এই ট্রেন্ড বাড়বে কারণ এখানে মানুষদের এখনও ঘরেই থাকতে হচ্ছে।’’

  • মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল ২০২০, ০৯:২১
  • ৯১৯

অনলাইনে বেচাকেনা বাড়ছে

তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে ডেলিভারিম্যান সঙ্কট থাকায় এবং সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যে ডাক সেবা বন্ধ থাকায় ডেলিভারি সেবা প্রায় বন্ধের মুখে বলে জানান ব্যবসায়ীরা

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ফলে উদ্ভূত সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে অনলাইনে বিলাসবহুল বা অপ্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্যের বাজার থমকে গেলেও জমে উঠেছে নিত্যপণ্যের বাজার। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৩-৪ গুণ বেশি বেচা-কেনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে মুদি পণ্যগুলো (নিত্য প্রয়োজনীয়) ছাড়া অন্যান্য পণ্যের বিক্রি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে ডেলিভারি পদ্ধতি ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলেও বলছেন ব্যবসায়ীরা।

নিত্যপণ্যের অন্যতম বড় অনলাইন আজকেরডিল ডটকমের চেয়ারম্যান ও সিইও একেএম ফাহিম মাশরুর বলেন, ‘‘নিত্য প্রয়োজনীয় ও মুদি সামগ্রীর বিক্রয় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। তবে রেস্টুরেন্ট এখনও বন্ধ থাকায় খাবারের দাম কমেছে এবং অন্য পণ্যগুলোর কথা বলতে গেলে বিক্রি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।’’

বর্তমান পরিস্থিতিতে ডেলিভারিম্যান সঙ্কট থাকায় এবং সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যে ডাক সেবা বন্ধ থাকায় ডেলিভারি সেবা প্রায় বন্ধের মুখে বলে জানান তিনি।

করোনাভাইরাস আতঙ্কে তাদের অনেক ডেলিভারিম্যান ঢাকা ছেড়ে নিজ নিজ এলাকায় চলে গেছেন বলেও জানান মাশরুর।

তিনি বলেন, তারা ঢাকার বাইরে থেকে প্রায় ৮০-৯০ শতাংশ ক্রয় অর্ডার পেয়ে থাকেন। কিন্তু ডাক সেবা ও পরিবহন সেবা বন্ধ থাকায় তারা গ্রাহকের কাছে পণ্যগুলো পৌঁছে দিতে পারছেন না।

অপরদিকে ফ্যাশন ও স্টাইল ব্র্যান্ড লা রিভের জেনারেল ম্যানেজার এসএম ইকবাল জানান, চলমান সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে তারা কোনো অনলাইন অর্ডার পাননি।

সব কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে জানিয়ে ইকবাল বলেন, ‘‘স্বাভাবিক সময়ে অনলাইনের মাধ্যমে আমরা দিনে গড়ে ১০০টি অর্ডার পেতাম, কিন্তু এখন আমরা কোনো অর্ডার পাচ্ছি না।’’

যোগাযোগ করা হলে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ই-ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ আবদুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে অনলাইন মার্কেট স্থবির হয়ে পড়েছে।

‘‘অনলাইনে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসমাগ্রী ব্রিক্রির পরিমাণ স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৩-৪ গুণ বৃদ্ধি পেলেও বিলাসবহুল বা অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির পরিমাণ প্রায় শূন্য হয়ে গেছে।’’

ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক জানান, বৈশ্বিকভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হওয়ায় অন্যান্য দেশের সাথেও ই-বাণিজ্য প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। পাশাপাশি, পর্যটনসহ সেবাখাতগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে চীন ও ভারতে অনলাইনে কেনাকাটা বিশেষ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের কেনাকাটা বেড়েছে জানিয়ে আশা প্রকাশ করে তমাল বলেন, ‘‘বাংলাদেশেও এই ট্রেন্ড বাড়বে কারণ এখানে মানুষদের এখনও ঘরেই থাকতে হচ্ছে।’’

তবে ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে তার সদস্যদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ওই লিফলেটগুলোতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কিভাবে তাদের ডেলিভারিম্যান ও কর্মীদের স্যানিটাইজেশন প্রক্রিয়ার মধ্যে রাখতে পারে অনলাইন কোম্পানিগুলো।

সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে ডেলিভারি সিস্টেমটি নিরবচ্ছিন্ন রাখতে ই-ক্যাব ডেলিভারিম্যান এবং যানবাহনগুলতে স্টিকার সরবরাহ করছে জানিয়ে তমাল বলেন, সাধারণ ছুটির দিনগুলোতে দারাজ ও সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসসহ কিছু বেসরকারি পরিষেবা পুনরায় চালু করলেও রাজধানীর বাইরে তাদের পণ্য সরবরাহ সীমিত রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

করোনাভাইরাসের প্রভাবে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন জানিয়ে ই-ক্যাবে নেতা এসব উদ্যাক্তাদের জন্য প্রণোদনা দেয়ার দাবি জানান।

তমাল জানান, তারা ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের থেকে বিশেষ অনুমতি নিয়েছেন যাতে অনলাইন ডেলিভারি কোম্পানিগুলোর পণ্য গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানোর সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধার সম্মুখীন না হয়।

এদিকে, দেশের সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশব্যাপী নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য সরবরাহ যতটা সম্ভব নিরবচ্ছিন্ন রাখতে অন্যান্য অংশীদারদের নিয়ে সরকারের অ্যাকসেস-টু-ইনফরমেশন (এটুআই) একটি পরিকল্পনা করেছে বলে জানান তিনি।

এই পরিকল্পনায় ওষুধ ও মুদি পণ্যগুলো ই-কমার্স সংস্থাগুলোর মাধ্যমে সরবরাহ করা যেতে পারে বলে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার প্রথম পর্যায়ে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্য্ন্ত দেশব্যাপী সাধারণ ছুটির ঘোষণা দেয়। পরবর্তীতে তা দুই দফা বাড়িয়ে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হয়েছে।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/1719 ,   Print Date & Time: Friday, 6 June 2025, 05:47:49 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh