• হোম > Following > প্রবৃদ্ধিতে বিশ্বের সেরা চারে বাংলাদেশ

প্রবৃদ্ধিতে বিশ্বের সেরা চারে বাংলাদেশ

  • শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২০, ০১:২২
  • ৮১০

প্রবৃদ্ধিতে বিশ্বের সেরা চারে বাংলাদেশ

প্রথমে সুখবরের মতো করেই বলা যাক। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) বিশ্বের চতুর্থ সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি হবে। এই পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশে ৭ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপির প্রবৃদ্ধি হতে পারে। বাংলাদেশের ওপরে থাকবে ক্যারিবীয় দেশ গায়ানা, আফ্রিকার রুয়ান্ডা ও জিবুতি।

সার্বিক বৈশ্বিক মানদণ্ডে এটি সুখবর বটে। তবে বিশ্বব্যাংকের দেওয়া এই পূর্বাভাসের পেছনে একটি দুঃসংবাদও আছে। সেটি হলো সর্বশেষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ জিডিপির প্রবৃদ্ধির তুলনায় কিন্তু এ বছর তা ব্যাপকভাবে কমে যাবে। অর্থাৎ এবার দেশের অর্থনীতি আগেরবারের মতো পারদর্শিতা দেখাতে পারবে না। তবে আগামী দুই অর্থবছরেই বাংলাদেশে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ হারে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হওয়ার পূর্বাভাসও দিয়ে রেখেছে বিশ্বব্যাংকবৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন থেকে প্রকাশিত ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস ২০২০’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে প্রবৃদ্ধির বৈশ্বিক পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক বলেছে, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ হলো তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। গত অর্থবছরে এখানে ৮ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তখন অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি রপ্তানি আয়ে বেশ প্রবৃদ্ধি ছিল। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ রপ্তানি আয়ে কিছুটা সুফল পেয়েছে। এ দেশে বড় প্রকল্পসহ অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ফলে ব্যবসায় আস্থা আসছে।

বিশ্বব্যাংক বলেছে, সুসংহত সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামো, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, পরিকল্পনামাফিক বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ, ব্যবসায় সহজ করার নানা উদ্যোগ ইত্যাদি বিবেচনা করেই বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

বিশ্বব্যাংক কিছু চ্যালেঞ্জের কথাও তুলে ধরেছে। সংস্থাটি বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও রয়েছে বিনিয়োগ ঘাটতি। এ ছাড়া আর্থিক খাতেও নানামুখী চ্যালেঞ্জ আছে, যা অর্থনীতিতে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। রাজস্ব খাতের সংস্কারে অগ্রগতি না হওয়ায় কর আদায়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই।

জানতে চাইলে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসটি নিঃসন্দেহে ভালো খবর। তবে প্রবৃদ্ধি শুধু সংখ্যা নয়। প্রবৃদ্ধিকে সংখ্যা হিসেবে না দেখে তা গুণগতভাবে কতটা অন্তর্ভুক্তিমূলক হলো, সেটা বিবেচনায় আনতে হবে। তাঁর মতে, সামনের দিনগুলোয় অর্থনীতিতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। রপ্তানিতে রীতিমতো ধাক্কা লেগেছে। মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা চলছে। সেখানে বড় সংকট তৈরি হলে প্রবাসী আয়েও আঘাত আসবে। এ ছাড়া এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে বড় প্রকল্প ও অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে, যা দীর্ঘদিন ধরে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ খরা কাটাতে সহায়তা করবে।

দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশেই সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি হবে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির মতে, তবে ভারতের প্রবৃদ্ধিও বাড়বে। চলতি অর্থবছরে দেশটির জিডিপির প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়াবে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, যা গত অর্থবছরে ছিল ৫ শতাংশ। পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি কমে এবারে ২ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে আসবে। এ ছাড়া শ্রীলঙ্কায় ৩ দশমিক ৩, নেপালে ৬ দশমিক ৪, মালদ্বীপে সাড়ে ৫, ভুটানে ৫ দশমিক ৬ এবং আফগানিস্তানে ৩ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হবে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এবারে সারা বিশ্বে ক্যারিবীয় দেশ গায়ানাতেই সর্বোচ্চ ৮৬ দশমিক ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে। এই প্রবৃদ্ধি অনেকটা অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। গায়ানার অর্থনীতির ভিত্তি বেশ ছোট বলেই তা সম্ভব।

বাংলাদেশের ওপরে থাকা রুয়ান্ডা ও জিবুতির প্রবৃদ্ধি হবে যথাক্রমে ৮ দশমিক ১ ও সাড়ে ৭ শতাংশ।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/16 ,   Print Date & Time: Friday, 6 June 2025, 07:59:58 PM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh