• হোম > ফিচার | বিদেশ > কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর দাড়ি এবং দাড়ি নিয়ে যত রাজনীতি

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর দাড়ি এবং দাড়ি নিয়ে যত রাজনীতি

  • বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২০, ১০:৩১
  • ৯৪৩

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো

জানুয়ারির শুরুতে শীতকালীন অবকাশ কাটিয়ে ফিরেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন মুখভর্তি নতুন গজানো দাড়ি।

তার অফিসিয়াল ফটোগ্রাফারের তোলা একটি ছবি প্রকাশের পর যেসব রাজনীতিবিদ দাড়ি রাখার কারণে লোকের স্তুতিতে ভেসেছেন তাদের তালিকায় ট্রুডো জায়গা করে নিয়েছেন।

প্রকাশিত ছবিটিতে দেখা যায়, থুতনি আর চোয়ালে কাচা-পাকা দাড়িমুখে ট্রুডো সিরিয়াস ভঙ্গিতে তাকিয়ে আছেন।

তবে ট্রুডোর জন্য চেহারায় বৈচিত্র্য আনার এই চেষ্টা এবারই প্রথম নয়।

লিবারেল দলের নেতা ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী হবার আগে প্রস্টেট ক্যান্সার বিষয়ক এক দাতব্য সংস্থার তহবিল সংগ্রহের সময় বাহারি গোঁফ এবং একটু ‘ছাগুলে দাড়ি’ রেখেছিলেন।
রাজনীতিবিদদের দাড়ি

আধুনিক রাজনীতিবিদদের মধ্যে দাড়ি রাখার বিষয়টি বেশ বিরল, কারণ কেউ হঠাৎ দাড়ি রাখতে শুরু করলে সেটা সবাই লক্ষ্য করে।

বিশ্বের কোন কোন অংশে দাড়ি রাখার বিষয়টিকে ব্যক্তিগত স্টাইলের চাইতে বেশি কিছু ভাবা হয়।
দাড়ি রাখাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মিশরে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে।

বহু বছর ধরে ধর্ম নিরপেক্ষ ঐতিহ্যের এই দেশটিতে দাড়ি রাখাকে দেখা হয় ইসলামিক কট্টরপন্থার প্রতীক হিসেবে।

যুক্তরাষ্ট্রে বহু বছর ধরে কোন রাজনীতিবিদের দাড়ি রাখা ভোটাররা অপছন্দ করেন, এবং নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীরা দাড়ি রাখেন এমন ধারণা প্রচলিত আছে।

দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী আল গোর ২০০১ সালে যখন নতুন করে জনসমক্ষে আসেন, তখন তার মুখ ভর্তি দাড়ি নিয়ে ব্যাপক বিশ্লেষণ হয়েছিল।

সেসময় তার দাড়িকে ‘নির্বাসনকালীন দাড়ি’ নাম দেয়া হয়েছিল।

এখন অবশ্য পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন।

সাবেক মার্কিন হাউস স্পিকার পল রায়ান ২০১৫ সালে ইনস্টাগ্রামে নিজের খোঁচা খোঁচা দাড়িসহ মুখের একটি ছবি দিয়ে লিখেছিলেন, গত প্রায় ১০০ বছরের মধ্যে তিনি প্রথম দাড়িওয়ালা স্পিকার।
এবং তার দাড়ি না কাটার সিদ্ধান্ত অনেক ভ্রুকুটির জন্ম দিয়েছিল।

ওকলাহোমা স্টেট ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক রেবেকা হেরিখের এক গবেষণায় দেখা যায়, ঐ সময়ে মার্কিন কংগ্রেসের মাত্র পাঁচ শতাংশ সদস্যের দাড়ি বা গোঁফ রয়েছে।

রিপাবলিকান দলের সেনেটর টেড ক্রুজ ২০১৮ সালে যখন প্রথম দাড়ি রাখেন, তা সপ্তাহখানেক ইন্টারনেটে আলোচনা চলে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার নিজস্ব স্টাইলের সাদা দাড়ির জন্য পরিচিত, এবং গত গ্রীষ্মে তার নতুন মন্ত্রীসভার ৫৮ সদস্যের মধ্যে ১৮ জনেরই দাড়ি ছিল।

মার্গারেট থ্যাচার যখন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, সেসময় তিনি দাড়ি রাখা এত অপছন্দ করতেন যে কেউ কেউ তাকে ‘পোগোনোফোবিক’ (যারা দাড়ি সহ্য করতে পারে না) বলে আখ্যায়িত করতেন।

সম্প্রতি বিদায় নেয়া লেবার নেতা জেরেমি করবিন ছিলেন ১৯০৮ সালের পর প্রথম দাড়িওয়ালা ব্রিটিশ নেতা যিনি কোন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে ছিলেন।
কানাডাতে বামপন্থী ফেডেরাল নিউ ডেমোক্র্যাটস দলের সর্বশেষ তিনজন নেতার দাড়ি ছিল।

দলটির বর্তমান নেতা জাগমিত সিং-এর দাড়ি আছে এবং তিনি শিখ রীতি অনুযায়ী পাগড়িও পরেন।

দেশটির গণমাধ্যম গ্লোব এবং মেইলের তথ্য অনুযায়ী মিঃ সিং-এর পূর্বসূরি থমাস মালকেয়ার যখন দলের নেতৃত্বে আসেন তখন তাকে দাড়ি কামিয়ে ফেলার আহ্বান জানানো হয়েছিল।

সর্বশেষ বিংশ শতাব্দীতে কানাডার গোঁফওয়ালা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন স্যার রবার্ট বোরডেন।

এখন এটি পরিষ্কার নয় যে মিঃ ট্রুডোর দাড়ি কি স্থায়ী ব্যাপার না, জানুয়ারির শেষে অটোয়াতে এমপিরা ফিরে এলে তিনি দাড়ি কামিয়ে ফেলবেন।

অস্থায়ী হোক আর না হোক, অবকাশ শেষে সাদাকালো দাড়িভর্তি মুখ নিয়ে ফেরা মিঃ ট্রুডোকে ‘পরিপক্ক’ রাজনীতিবিদের মত দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ম্যাকায় বার্নি গ্রুপ নামে কনসাল্টিং ফার্মের কর্ণধার লিন ম্যাকায়।

“দাড়ি রাখার মাধ্যমে তিনি বিশেষ পর্যায়ের এক পরিপক্কতা দেখাতে চাইছেন, সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।”


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/123 ,   Print Date & Time: Saturday, 7 June 2025, 10:52:37 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh