• হোম > দক্ষিণ আমেরিকা | ফিচার > করোনার সর্বগ্রাসী থাবা দেশে দেশে : শাটডাউনের পথে আমেরিকা

করোনার সর্বগ্রাসী থাবা দেশে দেশে : শাটডাউনের পথে আমেরিকা

  • শুক্রবার, ২০ মার্চ ২০২০, ০৭:৪৮
  • ৭৪৫

---

করোনাভাইরাস। শুরু আছে শেষ নেই। অনেকেই ভেবেছিল চীনে শুরু চীনেই শেষ হবে। তাই গুরুত্ব দেয়নি অনেকেই। ভেবেছিল চীনের ওপর দিয়েই যাবে। একটি দেশ থেকে বৈশ্বিক রূপ নেবে কেউ ভাবেনি। তাইতো অবহেলা করেছে ইতালি। অবহেলা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন তারা মাশুল গুনছে। করোনা এখন সর্বগ্রাসী রূপ। এক দেশ দুই দেশ করতে করতে দেড় শতাধিক দেশ ভয়ংকরভাবে ভুগছে করোনায়। করোনার গ্রাসে অচল হয়ে পড়েছে সবকিছু। অর্থনীতি, রাজনীতি, বিনোদন, খেলাধুলা আর জীবনযাপন কোনো কিছুই ছাড়ছে না করোনা। করোনার করালগ্রাসে একে একে নিভছে দেউটি। সুদূর বাংলাদেশে মুজিব শতবর্ষ থেকে আমেরিকার ক্লাব, বার, রেস্টুরেন্ট, রাজনীতি, অর্থনীতি কাউকে ছাড়ছে না। তাই যে কোন সময় পুরোপুরি শাটডাউনের পথে চলে যেতে পারে আমেরিকা। আমেরিকায় বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ভয়াবহ পরিস্থিতি এখনো আসেনি। সে পরিস্থিতি সামনে রয়েছে। করোনার ছোবলে বিশেষত নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটি- বিশেষ করে ব্যবসা এবং রাজনীতির পরিস্থিতি বিপর্যস্ত। ট্রাম্প প্রশাসন, বিরোধী ডেমক্র্যাট রাজনীতিকরা সমন্বয়ের ভিত্তিতে করোনা মোকাবিলার প্রয়াস নিয়েও মানুষের অবস্থা ফেরাতে পারছেন না। দোকানপাট, বিশেষ করে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা লাটে উঠতে বসেছে। রাস্তাঘাটে লোক চলাচল কমে গেছে। জনসমাগমের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
এদিকে করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কারের আশাবাদ প্রকাশ করা হলেও সর্বসাধারণের জন্য সহজলভ্য হতে তা এখনো দিল্লি দুরস্ত।
১৭ মার্চ সিএনএন, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট ও বিবিসির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনের সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪৪ জন, মারা গেছেন ৭ হাজার ১১৮ জন।
তবে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাত দিয়ে সিএনএন বলছে, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৮১ হাজার ৫০০ ছাড়িয়েছে, মারা গেছেন ৭ হাজার ১০০ জনেরও বেশি। চীনের সরকারি হিসাবে, করোনাভাইরাসে দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৮০ হাজার ৮৮১ জন এবং মারা গেছেন ৩ হাজার ২২৬ জন।
সীমান্ত সম্পূর্ণ বন্ধের পরিকল্পনা ইইউয়ের : করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে এবার সীমান্ত সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করার পরিকল্পনা করছে ইউরোপিয়ান কমিশন। ভাইরাসটি প্রতিরোধে ইতোমধ্যে ইউরোপের অনেক দেশ বিধিনিষেধ আরোপসহ সীমান্ত বন্ধ করেছে। এবার ইউরোপের শেনঝেনভুক্ত দেশে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ নিষিদ্ধ করার পথে কমিশন। ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট ভন ডার লেয়েন এক ভিডিও কনফারেন্সে জানিয়েছেন, দীর্ঘমেয়াদি বাসিন্দা, ইইউ নাগরিক এবং কূটনীতিকদের পরিবারের সদস্যদের ছাড় দেওয়া হবে। পাশাপাশি আন্তঃসীমান্ত এবং স্বাস্থ্যসেবা কর্মী এবং লোকজনের পণ্য পরিবহন করা হবে। এই পদক্ষেপ অন্তত ৩০ দিন স্থায়ী হবে।
তাজমহল বন্ধের নির্দেশ : ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তে সংখ্যা বাড়তে থাকায় তাজমহলে দর্শকদের প্রবেশে নিষিদ্ধ করেছে দেশটির পর্যটন মন্ত্রণালয়। ১৭ মার্চ রাতে টুইটে পর্যটনমন্ত্রী জানিয়েছেন, দেশের সব স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘর আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১১৪ জন, মারা গেছেন দুজন।
নিউজার্সি, পুয়ের্তো রিকোতে কারফিউ জারি : করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ন্ত্রণে ১৬ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে বাসিন্দাদের চলাচলে ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। ইউরোপীয় দেশগুলোতে স্কুল, সরকারি ভবন, প্রেক্ষাগৃহ, রেস্তোরাঁ ও বার বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত অনুসরণ করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে মার্কিন শহরগুলোতে। ব্যাপক-বিস্তৃত এই মহামারিতে যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ৭০ জনের মতো মারা গেছেন। আর আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৭০০ জনে।

ফিলিপাইনে পুঁজিবাজার বন্ধ : করোনাভাইরাস মোকাবিলায় পুঁজিবাজার বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ফিলিপাইন। এটিই প্রথম দেশ যেখানে করোনার কারণে পুঁজিবাজার বন্ধ ঘোষণা করা হলো। একই সঙ্গে দেশটির বৃহত্তম দ্বীপ লুসোনের বাসিন্দাদের ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৪০ জন এবং মারা গেছেন ১২ জন।
এবার বন্ধ হলো পুরো মালয়েশিয়া : বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস রুখতে ইতালি, স্পেনের পরপর এবার লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে গোটা মালয়েশিয়াকে। মহামারি ঠেকাতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। ১৬ মার্চ স্থানীয় সময় রাত ১০টায় জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ১৮ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত এ লকডাউন কার্যকর থাকবে। লকডাউন চলাকালীন ১৩ দিন সব প্রকার সুপারশপ, পাবলিক প্লেস, চেইন শপ, মার্কেট, শপিং কমপ্লেক্স, মসজিদের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধের আওতায় থাকবে।
এ কোন লন্ডন : এ কোন লন্ডন! চিরচেনা লন্ডনের রাতের চিত্র বা দিনের চিত্র দেখে যে কেউ থমকে যাবেন। পুরো অচেনা এক নগরীর রূপ নিয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত নগরীর অন্যতম লন্ডন। চারদিকে খাঁ খাঁ। রাজপথ, হোটেল, রেস্তোরাঁ, পাব সব শূন্য। মনে হতে পারে প্রাচীন কোনো নগরী। আগে এখানে মানুষের বসবাস ছিল। এখন নিস্তব্ধ চারদিক। কোথাও জনমানুষের দেখা নেই।
সৌদি আরবে সরকারি অফিস-আদালত বন্ধ : বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মরণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে এবার সরকারি অফিস আদালত বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরব। ১৬ মার্চ থেকে আগামী ১৬ দিনের জন্য দেশটির অধিকাংশ সরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা নিউজিল্যান্ডে : করোনাভাইরাসের আতঙ্কে নিউজিল্যান্ডে জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্ন ঘোষণায় জানিয়েছেন, ৫০০ বা তার বেশি লোক একত্রিত হয়ে কোনো ধরনের সমাবেশ বা অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারবেন না। ১৬ মার্চ থেকে এই নতুন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
অস্ট্রেলিয়ায় মারা যেতে পারে দেড় লাখ মানুষ : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে অস্ট্রেলিয়ায় দেড় লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে। এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির বিশেষজ্ঞরা। অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি চিফ মেডিক্যাল অফিসার পল কেলি ১৬ মার্চ বলেন, করোনায় যেকোনো দেশের জনসংখ্যার ২০ থেকে ৬০ শতাংশ মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন।


This page has been printed from Entrepreneur Bangladesh - https://www.entrepreneurbd.com/1147 ,   Print Date & Time: Sunday, 12 October 2025, 05:19:46 AM
Developed by: Dotsilicon [www.dotsilicon.com]
© 2025 Entrepreneur Bangladesh